Blog
কথাঃআবোলতাবোল
এক স্নেহভাজন তাঁর একটা ভ্রমণকাহিনিতে এক জায়গার গুরুত্ব বোঝাতে লিখেছিল,’ অনেকেই হয়ত জানেন না…’ জাতীয় শব্দবন্ধ। ওকে বলেছিলাম,তুমি লেখার আগেই কীভাবে ধরে নিলে,যা লিখছ তা অনেকে জানে না? তুমি কি সার্ভে করেছ,নাকি অনুমান? বলার অপেক্ষা রাখে না,অনুজটি ওই ধরণের শব্দবন্ধ আর কখনও লেখায় ব্যবহার করেনি। এই সব লেখার ত্রুটি সব সময় আমরা সচেতনভাবে যে করি তা কিন্তু নয়। পূর্বসূরী কারও লেখার প্রভাব থেকেও হয়। নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী সম্পাদিত ‘বাংলা কী লিখিবেন,কেন লিখিবেন’এ ‘বলাই বাহুল্য’ ব্যবহার নিয়ে বেশ কটাক্ষ রয়েছে। ‘বাহুল্যই যদি তবে বলা কেন?’ এটা পড়ার পর প্রতিবার এই শব্দবন্ধ ব্যবহারের আগে আমি ভেবে নিই একবার। ঠিক এমন সমস্যা গল্পে আপনি তুমি ব্যবহার নিয়েও হয়।’বাবা বললেন’ লেখা হয়ত ঠিক। কিন্তু অনেকসময় লিখতে গিয়ে,মনে হয় ‘বললেন’এ বাবা কে কেমন দূর দূর মনে হচ্ছে। তবু বাবা নিজের লোক। তুমি লেখাই যায়। কিন্তু রিকশাওয়ালা গল্পের নায়কের থেকে বয়সে ছোট হলেও ‘তুমি’ লেখা মুশকিল। পাশ থেকে কেউ কান মলে দিয়ে বলবে,’ও রিকশাওলা,তাই বুঝি আপনি নয়!’ এতো গেল লেখার কথা। কথা বলতে গিয়েও দেখেছি অনেক সমস্যা। বক্তা প্রচুর,শ্রোতা কম। তর্কপ্রিয় কেউ কেউ আবার ততটুকুই শোনেন যতটুকু তাঁর ডিবেট করতে লাগে। কারও কারও কথা বলার ধরণ হল, অভিযোগ অথবা দোষ দিয়ে দিয়ে। কেউ কেউ আবার কথা শুরুই করেন, ‘ভুল করছেন’ শব্দবন্ধে,এমনকী আপনি যদি বলেন বেগুনগাছে বেগুন হয় তবু্ও। আর এঁদের যুক্তিরও এত জোর, দেখেছি ঠিক প্রমাণও করে দেন যে বেগুনগাছে বেগুন হয় কথাটা ভুল ছিল একেবারে। ফলে যা হয়, আমার মত কমজ্ঞানী, যুক্তিদুর্বল প্রকাশ্যে মুখ খোলারই সাহস পায় না।