গল্পচোর পালান সেখ চেঁচাচ্ছে।–‘স্যাররা নিচে আসুন,নিচে আসুন। চোর ধরা পড়েছে,সাইকেল চোর।’ আজ স্কুলে পঁচিশে বৈশাখ উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠান। ক্লাস নেই। অনুষ্ঠান হবে স্কুলের হলঘরে। স্যারেরা তাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলেন। কয়েকজন স্টাফরুমে গল্পগুজব করছিলেন। কয়েকজন চায়ের ঘরে,চা খাচ্ছিলেন। আর কয়েকজন স্কুলের হলঘরে স্টেজের তদারকি করছিলেন। হেডস্যার নিজের চেম্বারে বসেছিলেন জরুরী কিছু কাগজপত্র নিয়ে। পালান সেখের চীৎকারে সবাই দোতালার ব্যালকনিতে এসে দাঁড়ান। এই স্কুলের স্যারদের বসার ঘর, হেডস্যারের চেম্বার, অনুষ্ঠানের হল,সবই দোতালায়। স্যারেরা ব্যালকনিতে আসতে পালান আবার উপরের দিকে তাকিয়ে চীৎকার করে-‘সাইকেল চোর ধরা পড়েছে,সাইকেল চোর।’ সাইকেল চোর ধরা পড়ার খবর হলঘরে সমবেত হওয়া ছেলেদের কানেও গিয়েছে। ওরা হল থেকে বেরিয়ে দৌড়ে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামে। হেডস্যারকে নিয়ে স্যারেরাও নিচে নেমে আসেন। অনেক কটা গ্রামের মাঝখানে এই স্কুল। সাইকেল নিয়ে প্রচুর ছাত্রছাত্রী আসে। আগে সাইকেল রাখার গ্যারেজ ছিল না। এখন গ্যারেজ হয়েছে। কিন্তু গ্যারেজ হলে কী হবে? গার্ডের ব্যবস্থা এখনও করা যায়নি। গ্যারেজের একটা দিকে আবার প্রাচীরের অনেকটা কিছুদিন আগে ঝড়ে ভেঙে গেছে। এখনও সারানো হয়ে ওঠেনি। সাইকেলগুলো তাই গ্যারেজে থাকলেও খুব সুরক্ষিত থাকে না। স্কুলগেটের পাহারাদার পালান সেখ। গেটের সঙ্গে গ্যারেজটা দেখার দায়িত্বও পালানের উপর চাপানো হয়েছে। কিন্তু তারও তো দুটোই চোখ। গেট সামলে অনেক সময়ই গ্যারেজের দিকটা দেখায় ফাঁকি থেকে যায়। ফলে উটকো লোক গ্যারেজে মাঝেমধ্যেই ঢুকে পড়ে। ঘটে সাইকেল চুরির ঘটনাও। সাইকেল চোর কিন্তু একটাকেও এখনও ধরা যায়নি। আজ সাইকেল চোর ধড়া পড়ায় ছাত্রেরা সকলেই উত্তেজিত। কিছু ছাত্র নিচে ছিল,তখনও হলঘরে যায়নি। চোরকে ধরেছে তারাই। তবে গেমসের অর্ণবস্যার কাছেপিঠেই ছিলেন। তাই চোরের উপর ওদের মারটা দু একটা কিল চড়ের বেশি এগোয়নি। সাইকেল চোরকে গ্যারেজের কাছের শিমুলগাছটার তলায় বসিয়ে রাখা হয়েছে। বেড় দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ছাত্রেরা। স্যারেদের নিয়ে হেডস্যার ওখানে পৌঁছতেই উঁচুক্লাসের কয়েকজন ছাত্র আওয়াজ তুলল-‘ওকে আমাদের হাতে ছেড়ে দিন স্যার। এতদিন যত সাইকেল চুরি গেছে সব কটার শোধ তুলব ওর পিঠে।’ হেডস্যার ছেলেদের কথার জবাব দেবেন কি সাইকেল চোরকে দেখেই তো চক্ষু চড়কগাছ। এতটুকু ছেলে সাইকেল চুরি করছিল! বয়স খুব বেশি হলে
Recent Comments